নবম শ্রেণির ছা’ত্রী সুমি রানী। চার বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। পড়াশোনা আর হাসি খুশিতেই সময় কাটছিল তার। হঠাৎই একদিন র’ক্ত বমি আর পেট ব্যথা সুমির। কে জানে তার শরীরে বাসা বেধেছে মা’রাত্মক এক ব্যধি।
অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায় তার পেটের খাদ্যনালী ব্লক হয়েছে অসংখ্য ছোট বড় টিউমা’র দ্বারা। তখন থেকেই তার খাওয়া দাওয়া বন্ধ। একের পর এক চিকিৎসা চলছে তার।
সুমি বগুড়া শহরের হাসনা জাহান ভান্ডারী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছা’ত্রী। শরীর শুকিয়ে হাড্ডি সার হয়ে গেছে তার। চেনা যায় না সুমিকে। সদরের শি’ববাটি এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ক্ষুদ্র কাঠের সামগ্রী বিক্রেতা রতন চন্দ্র মোহন্ত তার বাবা।
মে’য়ের দীর্ঘ চিকিৎসায় বাবার ক্ষুদ্র আয়ের সংসারেরও সব শেষ। চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে না পেরে মা’থায় আকাশ ভেঙে পরার উপক্রম তার অসহায় বাবার। মানুষের কাছে এখন হাত পেতে মে’য়ের চিকিৎসা চালাচ্ছেন তিনি।
জীবন মৃ’ত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে সুমি এই সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চায়। চিকিৎসার অর্থের জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছে সে।
সুমির মা শেফা’লী রানী মোহন্ত জানান, দুই মাস আগে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লের গ্যাস্ট্রোলিভা’র বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাইমুল হাসানের তত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয় সুমির।
সেখানেই পর্যায়ক্রমে তার পেটের খাদ্যনালীর ভেতরে ৩২টি টিউমা’র অ’পসারণ করা হয়। কিন্তুু আরও অসংখ্য টিউমা’রে ব্লক হয়ে আছে তার পেটের নালী।
এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গণেশ কুমা’র আগরওয়ালার পরাম’র্শে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোরেক্টাল বিভাগে ভর্তি করা হয় তাকে। এখন সি-ব্লকের ৬নং ওয়ার্ডের ৭নং বেডে চিকিৎসা চলছে তার।
মে’য়ের চিকিৎসায় ধারদেনা করে ওষুধ কিনে সংসারে অবশিষ্ট বলে আর কিছু নেই। তার চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে তাদের ছোট কাঠ সামগ্রীর ক্ষুদ্র ব্যবসাটিও শেষ।
এই বিভাগের বিশেষজ্ঞ সার্জন রতন চন্দ্র মোহন্ত জানান, কোলন ক্যান্সার ও রেক্টাল ক্যান্সার একত্রে কলোরেক্টাল ক্যান্সার নামে পরিচিত। সুমি এই রোগে আ’ক্রান্ত। বাংলাদেশে এই রোগের প্রকোপ আছে। প্রথম দশটি ক্যান্সারের মধ্যে একটি হলো কলোরেক্টাল ক্যান্সার। তবে কলোরেক্টাল ক্যান্সার অনেকাংশেই নিরাময় যোগ্য। একটু সচেতন হলে এই ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা ও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সুমির শরীরে প্রতিদিন ৬ হাজার ৫শ টাকা মূল্যের ইনজেকশন প্রয়োজন বলে জানান তিনি। সুমির মা শেফা’লী রানী মোহন্ত বলেন, অন্যের কাছ থেকে ধার দেনা করে দুটি ইনজেকশন দেয়া সম্ভব হয়েছে। তাই তারা সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা : শেফা’লী রানী মোহন্ত (মা), হিসাব নং ৩৬০০১৩০৫, বেসিক ব্যাংক, বড়গো’লা শাখা, বগুড়া। মোবাইল : ০১৭৩৫-৪০৫৯৫৭।