
শিক্ষামন্ত্রী ডা দীপু মনি বলেছেন, ‘এখনও সময় আছে, কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার পরিস্থিতি এখনও হয়নি। পরীক্ষা শেষে যদি ফেব্রুয়ারিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা যায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কারণে সেশনজট হবে না। ’ সংবাদ সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ কথা জানান।






সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলি, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোক বিভিন্ন কথা বলেন। সেগুলো নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোয় নানা রকম সম্ভাবনার কথা বলা হয়। আমি কখনও বলিনি যে পরীক্ষা কমিয়ে ফেলবো।






আমি বলেছি, কোনো কোনো দেশে পরীক্ষার সংখ্যা কমিয়েছে। কোথাও পরীক্ষা ছাড়া অটো-প্রমোশনও হয়েছে। একেক দেশে একেকভাবে সমস্যা সমাধান করেছে। আম'রা এর কোনওটির কথাই বলছি না। এগুলো নানান রকমের চিন্তা-ভাবনা। কে কী করছে তা দেখছি, কোনটা কত ভালো তা দেখছি। কতটা মন্দ সেটাও খতিয়ে দেখছি।






শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একইসঙ্গে আমা’দের নিজস্ব পরিকল্পনাও একটা আছে। সেটা হলো, আমা’দের এইচএসসির সম্পূর্ণ প্রস্তুতি ছিল এখনও আছে। কিন্তু আম'রা সবাই জানি এখন কি পরীক্ষা নেওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি আছে? ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী। সমাজটা যেমন, তাতে পরীক্ষার্থী যখন পরীক্ষা দিতে যাবেন, তখন পরিবারের কেউ না কেউ সেখানে যাবেন। বামা-মা, ভাইবোন সব সবসময় যান।






তারাও লাখ লাখ। যারা পরীক্ষা পরিচালনা করবেন তারাও লক্ষাধিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন এবং প্রশাসনের লোকসহ নানা রকম লোকের সম্পৃক্ততা রয়েছে সরাসরি। এতো লাখ মানুষ, হয়তো ২০/২৫ লাখ হবে। এই মানুষগুলোকে নিয়ে যে পরীক্ষা হবে, যাদের বেশিরভাগ লোক চলাচল করবেন গণপরিবহনে।






এতো লোকের সমাগমে যে কর্মযজ্ঞ তা এখন করার মতো আদৌ পরিবেশ আছে?’ দীপু মনি বলেন, ‘সরকার সব দিক তীক্ষ্ণভাবে খেয়াল রাখছে, সব দিক বিবেচনা করছে। অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীর উদ্বেগের কথা ভেবেছি। আমা’রা যারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি তাদেরও অনেক পরিবারে পরীক্ষার্থী রয়েছে।






কাজেই এমন নয় যে বিষয়টি আমা’দের কাছে অজানা। তাই আম'রা বলছি, অনুকূল একটা পরিবেশ হলেই সঙ্গে সঙ্গেই আমা’দের সিদ্ধান্ত জানাবো এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে আজকেই জানিয়ে বললাম কাল থেকে বা দুই দিন পর থেকে পরীক্ষা তা নয়। যখন অনুকূল পরিস্থিতি হবে, ঘোষণা করবো তার থেকে অন্তত পক্ষে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে পরীক্ষা নেবো।






তাতে আশা করি আমা’দের পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হবে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কবে নাগাদ অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে আম'রা জানি না। যদি এমন হয় যে অনেক বেশি সময় লেগে গেলো, তখন হয়তো আমা’দের বিকল্প কিছু ভাবতে হতে পারে। অনেক কিছুই আমা’দের পরিকল্পনায় রেখেছি।






তবে এখন পর্যন্ত এইচএসসি পরীক্ষার কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার পরিস্থিতি এখনও হয়নি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ক্লাস শুরু হয় কবে? শুরু হতে হতে মার্চ মাসের আগে সাধারণত হয় না আম'রা যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভর্তি সম্পন্ন করতে পারি, তাহলে যারা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তাদের একদিনও সময় নষ্ট হবে না বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বা ক্লাসের ক্ষেত্রে।






আম'রা পরীক্ষা হওয়ার দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট দেই। তাহলে রেজাল্ট জানুয়ারি মাসের শেষের মধ্যেও যদি দেই, তাহলে যদি শুধু ফেব্রুয়ারি মাসে ভর্তির ব্যবস্থা করা সম্ভব। যদি জানুয়ারি মাসের শেষে রেজাল্ট দিতে হয় তাহলে নভেম্বরে পরীক্ষা শেষ হয় তাহলেও চলতে পারে। তারপর সব কিছু যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে নভেম্বরে শেষ করতে হবে।’






দীপু মনি আরও বলেন, ‘যদি এর থেকেও পরে যায় তাহলে আমা’দের আমা’দের ভাবতে হবে, পরবর্তী বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতটুকু সময় হারাচ্ছি, সেশন জট হবে? যদি সেশন জট তৈরি হয়, তখন বিকল্প কিছু ভাবতে পারি। তার আগে আম'রা বিকল্প কিছু করার কথা বলতে চাই না। জেএসসি জেডিসি পরীক্ষা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘এই পরীক্ষা নভেম্বরে হয়, আম'রা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা পাঠাচ্ছি। এটি অনুমোদন হয়ে আসলে আম'রা আপনাদের জানাবো। ’