চলমান ব’ন্যা পরিস্থিতিতে শুকনো জায়গা না পেয়ে মৃট’ত বাবাকে অগত্যা ঘরের মেঝেতেই কবর দিয়েছেন ছেলে। রাজশাহীর বা’গমা’রা উপজে’লার বড়বি’হানালী ইউনি’য়নের বেড়া’বাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘ’টে। ছেলে আবুল হোসেন বা’গাতি (৫০) নিজেই গত বুধবার মৃ’ত পিতাকে শয়ন ঘরের পাশের বৈঠক ঘরে কবর দিয়েছেন।






ব’ন্যার পানি বাড়ার কারণে ঘরের ভেতরেই ক’বর দিতে হয়েছে বলে জানিয়ে’ছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘চল’মান ব’ন্যায় গো’রস্থান ডু’বে গেছে। শু’কনো জায়’গাও নাই। তা’ই বি’পাকে পড়ে বাবাকে ঘরের ভেতর কবর দিয়ে তালা মে’রে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন এই গ্রামের কেউ মা’রা গেলে ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া ছা’ড়া উপায় নেই।’






আবুল হোসেন বাগাতি জানান, গত মঙ্গলবার রাতে বৃদ্ধ বাবা আবু তাহের (৮৭) মা’রা যান। নিজেদের কবরস্থানসহ আশপাশের এলাকা ডুবে যাওয়ার কারণে নিরুপায়ে তাঁদের বৈঠকখানায় কবর খনন করে সেখানেই দাফন করা হয়েছে। খবর পেয়ে রোববার সরে’জমিনে গিয়ে বৈঠকখানার ভেতরে কবর দেখা যায়।






বাহির থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে সেখানে তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি ঘরের তালা খুলে তার বাবার কবর দেখান। তিনি জানান, তারা বৈঠক খা’নার পা’শের বা’ড়িতে থাক’ছেন। বাড়িতে অ’তিথি আসলে সেখানে (বৈঠকখানায়) রাখতেন। তারাও মাঝে মধ্যে থাকতেন বৈঠকখানায়। সেটা এখন বাবার কবর বলে জানান তিনি।






এদি’কে, ব’ন্যায় পু’রো গ্রা’মটি (বেড়া’বাড়ি) এখ’ন ভাসছে। এই গ্রা’মের তিনশতাধিক লোকজন গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়াও আশপাশের আরও দুটি গ্রামের ব’ন্যার পানি ঢুকে বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। গবাদি পশু ও বা’ড়ির মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়ে’ছেন পুরো গ্রামবাসী। এ কা’রণে অনেকে কম’দামে গবাদি প’শু বি’ক্রি করে দিয়েছেন।






আ’বার অনেকে সড়কে বা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে এসেছেন। পানিবন্দী হওয়া লোকজনদের মধ্যে খাবারের কষ্ট দেখা দিয়েছে। নলকূপ ডু’বে যাওয়ার কারণে বিশু’দ্ধ পানিও পান করতে পারছেন না। অনেককে উঁচুস্থানে বা বাড়ির ছাদে রান্না করতে দেখা যায়। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।






রো’ববার পর্যন্ত সেখানে কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি। প্র’শাসন বা স্থানীয় জ’নপ্রতিনিধিরাও ‘খোঁজ-খবর নেননি বলে অ’ভিযোগ করেন। আখিজান বেগম (২৮) নামের একজন বাসিন্দা বলেন, তাদের বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। ঘরের ভেতরের পানি সেচে সেখানে খাটের ওপর কোনো রকম রাত পার করছেন।






জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন শ্রমিক বলেন, বাজার ও রান্না করার ব্যবস্থা নেই। শিশু সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে আছেন বলে জানান। স্থানীয় ব্যাংক কর্মক’র্তা কাঞ্চন কুমার জানান, এক সপ্তাহ ধরে গ্রামের লোকজন ব’ন্যাকবলিত। গ্রামের লোকজন পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।






গবাদি পশু ও মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গ্রামের রাস্তাঘাটও তলিয়ে গেছে। নৌকা ছাড়া চলাচল করা যায় না।
বড়বিহানালী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান বলেন, সরকারি ভাবে এখনো কোনো ত্রাণ সামগ্রী পাওয়া যায়নি। তবে উপজে’লা প্রশাসনের পক্ষে ব’ন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা করতে বলা হয়েছে।






তিনি তালিকা জমা দিবেন। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। তিনি গ্রামটিতে যাননি বলে স্বীকার করেছেন। উপজে’লা নির্বাহী কর্মক’র্তা শরিফ আহম্মেদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। অনেক এলাকায় উপজে’লা প্রশাসনের পক্ষে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। তবে বেড়াবাড়ি গ্রামের লোকজনদের দুর্ভোগের বিষয়ে তাকে কেউ জানায়নি বলে জানিয়েছেন।





