বিভিন্ন সময় চু’রি-ডা’কা’তির ঘ’টনায় গ্রে’ফতার হয়ে জেলে যাওয়ার পর তাদের পরিচয়। সেখানে বসেই বড় কোনো শোরুমে ডা’কাতির পরিকল্পনা করে তারা। জেল থেকে বেরিয়ে তারা যোগাযোগ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ২৩ জুন মধ্যরাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থা’নাধীন ৫৭/১৫ পান্থপথের ওয়ালটন প্লাজা (এসটি) শোরুমে আনা মালামাল ডা’কাতি করে।






এ ঘটনায় ওয়ালটন শোরুম টিম ম্যানেজার মো. রানা মিয়া (২৭) পরদিন (২৪ জুন) শেরেবাংলা নগর থা’নায় একটি মা’মলা দায়ের করেন। এরপর ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতদলের চার সদস্যকে গ্রে’ফতার করা হয়।






প্রথমে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বছিলা থেকে মো. রবিউল ইস’লামকে (৩১) গ্রে’ফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সুমন, রানা ও সাথী নামে আরও তিনজনকে গ্রে’ফতার করা হয়। এদের মধ্যে রবিউল ইস’লাম ১৬৪ ধারায় আদালতে ডা’কাতির ঘ’টনায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, ডা’কাতির ঘটনায় জড়িত সাত-আটজন। তাদের ডা’কারির পরিকল্পনা জেলে বসেই।






রোববার (৫ জুলাই) দুপুরে শেরেবাংলা নগর থা’নায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, ডা’কাতির মা’মলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪টি ওয়ালটন ফ্রিজ, পাঁচটি এলইডি টেলিভিশন, একটি মোবাইলফোন এবং ড্রাইভারের সাড়ে চার হাজার টাকা এবং হেলপারের ৮০০ টাকা নিয়ে যায় ডা’কাতরা। এরমধ্যে পু’লিশ চার আসামিকে গ্রে’ফতার এবং ১৮টি ওয়ালটন ফ্রিজ এবং তিনটি এলইডি টেলিভিশন উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে।






ডা’কাতির বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জে ডি’লারের কাছে (রহমত ইলেকট্রনিকস) পাঠানোর উদ্দেশে ওয়ালটন কোম্পানির নিজস্ব পরিবহনে করে (ঢাকা মেট্রো ড-১১-৭০-৩৫) শোরুমের কর্মচারী জিহাদ হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, মো. তারেক হোসেন মারফত মালামাল উঠানো হয় এবং পণ্যের চালান কপি ড্রাইভার আনোয়ার হোসেন (৩০) এবং হেলপার মিরাজের (১৯) কাছে হস্তান্তর করে শোরুম কর্মচারীরা চলে যায়।






তারা স্থান ত্যাগ করার পরপরই একটি খালি পিকআপযোগে সাত-আটজন দুষ্কৃতিকারী এসে তাদের হাতে থাকা চাপাতির ভয় দেখিয়ে ওয়ালটনের ড্রাইভার-হেরপারকে গাড়িতে উঠায় এবং বিভিন্ন জায়গায় মালামাল নামিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পর শেরেবাংলা নগর থা’নায় দায়ের করা মা’মলা ত’দন্ত করছিলেন থা’নার উপ-পরিদর্শক এসআই সুমন চন্দ্র শীল। মা’মলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং আলামত উদ্ধারে কাজ শুরু করে শেরেবাংলা নগর থা’না টিম।






ডিসি হারুন বলেন, মা’মলার ঘটনার তেমন কোনো ক্লু না থাকায় ত’দন্ত শুরু করতে হয় বড় পরিসরে। প্রথমে সিসিটিভি ক্যামেরার সহায়তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকাসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজ যাচাই-বাছাইসহ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ১ জুলাই রবিউল ইস’লামকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রে’ফতার করা হয়।






তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ত’দন্ত টিম বিভিন্ন স্থানে অ’ভিযান পরিচালনা করে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থা’নার বসুন্ধ’রা রিভারভিউ এলাকা থেকে আসামির স্বীকারোক্তি মতে সাতটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়। অন্যান্য মালামাল ও আসামিদের কথা জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানায়, ডাকাতিতে তার চার সহযোগী মো. শাহজাহান (২৪), মেহেদী হাসান মৃধা ওরফে হাসান (২৮), মো. রনি (২৫) ও আব্দুর রহিম (২৮) ময়মনসিংহ জে’লা ডিবি পু’লিশ কর্তৃক আটকের পর জেলহাজতে রয়েছেন। অ’পর আসামি সুমন রানাসহ অন্যরা পলাতক।






তথ্য যাচাইয়ের পর ত’দন্ত টিম ময়মনসিংহ থেকে হাসান ও রনির হেফাজতে থাকা দুটি ফ্রিজ ও দুটি টেলিভিশন উদ্ধার করে। পরে রবিউল ইস’লাম ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। রবিউলের দেয়া তথ্যমতে, গত ৪ জুলাই ডাকাতিতে অংশগ্রহণকারী সুমন ও রানাকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জাউচর আরশিনগর এলাকা থেকে গ্রে’ফতার ও একটি টেলিভিশন উদ্ধার করা হয়।






তাদের দেয়া তথ্যমতে, সাভার-আশুলিয়ায় মেহেদী হাসান মৃধার দুই আত্মীয়র বাড়ি থেকে দুটি ফ্রিজ জ’ব্দ করা হয়। এছাড়া তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাথী নামে একজনকে গ্রে’ফতার ও তার দোকান থেকে ছয়টি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়।






প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ডাকাতির ঘটনায় অংশগ্রহণকারীরা আন্তঃবিভাগীয় ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য। জেলহাজতে থাকাকালে একে অ’পরের সাথে পরিচয় হয়। সেখানেই ডাকাতির পরিকল্পনা করেন তারা। গ্রে’ফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে আদালত সোপর্দ করা হবে বলেও জানান ডিসি হারুন।